বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৩ অপরাহ্ন
রাকিবুল ইসলাম, তেরখাদাঃ
আর মাত্র ছয়দিন পর উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদ-উল আযহা। আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী তেরখাদা উপজেলার ইখড়ি গরু-ছাগলের হাটে প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠায় জমজমাট হয়ে উঠেছে। সবাই নিজ সামর্থ্যরে মধ্যে পছন্দের কোরবানির পশু কিনতে ছুটছেন ইখড়ি গরু-ছাগলের হাটে। শেষ মুহুর্তের কেনাবেচায় ইখড়ি গরু-ছাগলের হাটে ব্যাপক ভীড় লক্ষ করা গেছে; পছন্দের কোরবানীর পশুটি কিনতে বিরামহীন হাঁটছেন সবাই। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধার কারনে ইখড়ি গরু-ছাগলের হাটটি ক্রেতা-বিক্রেতারা স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ইখড়ি গরু-ছাগলের হাট বসে। উপজেলায় ছোট ছোট বেশ কিছু খামারে পালন করা হয় দেশি-বিদেশি জাতের গরু। তবে এখানকার অধিকাংশ গরু, ছাগল স্থানীয় কৃষকেরা লালনপালন করেন। এসব গরু-ছাগল প্রাকৃতিক পরিবেশে লতাপাতা, ঘাস-খড় খেয়ে বেড়ে উঠে। গতকাল শুক্রবার ইখড়ি গরু-ছাগলের হাটে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অন্য বছরের মত এবারও উপজেলাসহ অন্যান্য জেলা ও উপজেলার গ্রামাঞ্চল থেকে বিপুল সংখ্যক দেশী গরু-ছাগল হাটে আসছে। ব্যাপারীদের ব্যাপক আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে। তারা হাটে এসে ঘুরে-ঘুরে গরু-ছাগল কিনছে আর ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাতে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৫৭১ টির মতো। কিন্তু খামারিরা প্রস্তুত করেছেন প্রায় ১১ হাজারের মতো পশু। যা চাহিদার চেয়ে সাড়ে ৬ হাজার হাজারেরও বেশি। তাই এবার উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে খামারিদের প্রস্তুত করা পশু সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
উপজেলায় গরু মোটাতাজাকরণ খামার ৩ হাজার ৩২ টি, ছাগলের খামার রয়েছে১৭৭২ টি ও ভেড়ার খামার রয়েছে ১৪ টি। এ ছাড়াও উপজেলার গ্রাম-গঞ্জে প্রায় বাড়িতেই রয়েছে ১ থেকে ৪ টি করে বিক্রির উপযুক্ত গরু ও ছাগল রয়েছে। তেরখাদা-খুলনা সড়কের পাশে হাটটির অবস্থান হওয়ায় বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে গরু-ছাগল পাইকাররা সহজেই গরু-ছাগল আনা নেয়া করতে পারেন। এদিকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাকডাকে ইখড়ি গরু-ছাগলের হাটে কোরবানির পশুর এখন বেশ সরগরম। হাটটিতে যে সব বড় বড় গরু-ছাগল আমদানি হয় তার বেশির ভাগই তেরখাদাসহ বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে আসে। এসব গরু মোটাতাজাকরণ ওষুধ ছাড়াই প্রকৃতির খাবার খেয়ে খামারিরা বড় করে থাকেন। সে কারনে ক্রেতারা ঐতিহ্যবাহী ইখড়ি গরু-ছাগলের হাট থেকে পশু ক্রয় করতে আগ্রহী বেশি। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা থাকায় গরু-ছাগল ক্রয় করে দেশের যে কোন স্থানে সহজেই নিয়ে যাওয়া যায়। গরুর হাটে গরু কিনতে আসা কাটেংগা এলাকার এস এম সাফায়েতুল্লাহ জানান, বাজারে গরু বিক্রেতার চেয়ে ব্যবসায়ী আর দালালের উপস্থিতি অনেক বেশি। এ কারণে গরুর দাম অনেক বেশি চাওয়া হচ্ছে। যে গরু ১ লাখ টাকায় বিক্রি হবে তার দাম চাওয়া হচ্ছে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রিয়ংকর কুন্ড বলেন, এখানকার গরু কোনধরনের মোটাতাজাকরণ ওষুধ ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠে তাই এ উপজেলাসহ আশ-পাশের অন্যান্য জেলা ও উপজেলার লোকজনের কাছে এখানকার দেশীজাতের গরুর ব্যাপক চাহিদা হয়েছে। তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন বলেন, ইখড়ি গরুর হাট কেন্দ্রিক নজরদারিসহ সার্বক্ষণিকপুলিশের টহল রয়েছে। হাটে পশু বিক্রি করে বিক্রেতারা যেন অর্থ নিয়ে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারে পুলিশ সে বিষয়ে সজাগ রয়েছে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA